চাহিদা

ক্ষোভ (জানুয়ারী ২০১৪)

দীপঙ্কর বেরা
  • ১২
  • ১৮
অরুণের সঙ্গে আমার বয়সের পার্থক্য যাই থাক কোন অসুবিধায় পড়লে আমার কাছে তার আসা চাই । আমিও যতটা সম্ভব তা সমাধান করার চেষ্টা করেছি । ও মোটামুটি পড়াশুনার পর যে কাজ পেয়েছে তাতে ও মোটেই সন্তুষ্ট নয় । তাই অন্য কিছু বিজনেস করার জন্য আমার কাছে পরামর্শ চায় ।
-কি কাজে আয় করা যায় খুব সহজে আর অনেক ?
-কাজ তো অনেক কিছু আছে । তুই সামর্থ্যের মধ্যে আমার মনে হয় যে কাজের সঙ্গে যুক্ত তাই করতে পারিস । এতে কি হয় সহজেই ব্যাপারটা বুঝতে পারা যায় । কেউ ঠকিয়ে যেতে পারবেও না । না ?
-কিন্তু এই কাজে খুব ধার বাকী । লোকের সঙ্গে বার বার টাকা চাওয়া আমার পোষাবে না । তাছাড়া এত পরিশ্রম অফিস বাইরে যদি করতেই থাকব তো আরাম করব কখন ।
-ঠিক কথা । লোক রাখলেও তো দেখাশুনা করতে হয় ।
-তাই তো দেখো , এখানে এত গুলো কর্মচারী আসছে আর যাচ্ছে । কোন কাজ করছে ? আমাদের পাঁচজন রোজ আসি । আর মুখ গুঁজে কাজ করে যাই । আর ওরা বসে খ্যাঁচ খ্যাঁচ আমার একদম ......।
আরো বলতে যাচ্ছিল আমি কাজের বাহানায় সরে আসি । এবার ও বরাবরের মত ক্ষোভ উগরে দেবে । এমন কি আমাকেও ছাড়বে না ।
আমাদের সামাজিক ডেকো-রামে বুদ্ধির সিস্টেমে নানান ভাবে টাকা নির্ধারিত । আবার একেবারে নীচে কোন কাজ ও কাজের প্রোগ্রেসের ভিত্তি যারা গড়ে তোলেন তারা সংখ্যায় কমই থাকে । ঝাট দেওয়া , ফাইল বওয়া , জল তোলা , গাড়ি চালানো আর প্রত্যক্ষ উৎপাদন ব্যবস্থা , মাঠে ঘাটে কাজ করা , ফসল সবজি উৎপাদন ইত্যাদির সঙ্গে যুক্ত লোক সবই চুক্তির ভিত্তিতে কাজ কর্ম করে যাচ্ছে । অনেকে ঠিক মত মজুরিও পাচ্ছে না । হিসেব অনুযায়ী হয়তো প্রফিট হচ্ছে । কিন্তু এই কম আয় বেশি কাজের লোকই বেশি । ফলে ক্ষোভ বাড়ছে সর্বস্তরে । আমি কোন দলে পড়ি ঠিক বুঝতে পারি না ।
অরুণ আমাদের পাড়াতেই থাকে । দুজনেই এখানে কাজ করি । অরুণ নিজের চেষ্টায় এখানে এসেই আমাকে দেখতে পেয়ে বলেছিল – দাদা , আমাকে বললে না তো । এই কাজটার ব্যবস্থা করে দিলে না । আমি তো তাও পেয়ে গেলাম । তার পর থেকে আমাকে আর পাত্তা দিত না । পরে নানা ব্যাপারে বেশ পরামর্শ নেয় । কিন্তু সেই রাগটা থেকে ও প্রায়ই শুধু আমার নয় অনেকেরই কে কি কাজ করে , কেমন টাকা পায় , কোন উল্টো কাজ হয় কি না ইত্যাদি ব্যাপারে পেছনে লাগার চেষ্টা করে ।
অরুণকে এ ব্যাপারে অনেকে ধমক দেয় – তোমার অত কি হে , নিজের কাজে মন দাও । অন্যের কাজটা এমনি এক ঝলক সাদা চোখে দেখে বোঝা যায় না । কাজ কাজের চাপ সারাদিনের চলাফেরা যে যে কাজ করে সে ই ভাল করে জানে ।
-ও অনেক দেখেছি । সারা দিন তো দেখছি পেন নিয়ে চেয়ারে বসে লিখেই বসে আছেন । কাগজ ঘাঁটলে কাজ হয় না । আবার টাকা তো ভালই ।
-মুখ সামলে কথা বল । তোর টাকা নাকি । আমি কি করি দেখার লোক আছে ।
-ও ! কে দেখে , যতোসব । টেবিলের তলায় কি হয় জানি না !
-এই অরুণ !!
আরো কিছু বলার আগে অন্যজন থামিয়ে দেয় । গণ্ডগোল থেমে যায় । কিছুদিনের মধ্যে আবার সব ঠিক হয়ে যায় । আর অরুণ মনে মনে একটা ক্ষোভ পুষে রেখে কথা বলে , আমার সঙ্গে এ সব নিয়েই আলোচনাও করে । অনেক বার বোঝানোর চেষ্টা করেছি । অন্যে কি করছে না দেখে নিজে কি করতে পারো তাই ভাবো ।
আমি একটু জ্ঞান দিই – মনে আছে তুই পড়াশুনা কম পারতিস । আর ভাবতিস এত পড়া কেউ মনে রাখতে পারে না । টুকলি করে অনেকেই পাশ করে । তা কিন্তু নয় । আমাকে দেখে বড় হওয়ার চেষ্টা করেছিস । এখন ভুলে গেলি ।
ও তা বুঝতেই চায় না । বলে - তোমার মত কাজ আমিও তো পারি । অথচ আমার সংসার খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে । একে কি বাঁচা বলে । গাড়ি নেই , বাড়িটা রং করতে হবে । ছেলেকে বড় ইংলিশ মিডিয়মে দিতে পারি নি ।
-আরে তোর তো মোটর সাইকেল আছে । আমার তাও নেই । ভাড়া বাড়িতে থাকি ।
-তোমার কথা বাদও তো । তুমি তো কঞ্জুস ।
আমি আর কথা বাড়াই নি । জানি বোঝান যাবে না । আমার খরচ আমিই বুঝি । কিন্তু এরাই তো সমাজে বাড়ছে । কি আর করা যাবে ।
প্রায় বছর পাঁচের মধ্যে অরুণ চার চাকা নিল , তিন তলা বানাল । অনেক অভিযোগও বেশ শুনছি । অন্য এক আশ্রয়ে আশ্রয় নিয়েছে অরুণ । পাওনাদার আসে । কথা বার্তাও বেশ উঁচু গলায় বলে । কাও কে পাত্তা দেয় না । সংসারে প্রায়ই ঝগড়া । বাবা মা আলাদা । পুলিশও কয়েকবার এসেছে । অরুণ ও সব পাত্তা দেয় না । বিন্দাস আছে ।
অরুণকে দেখি আর মেলাতে থাকি আমাদের খুব চেনা সমাজ ।।
আপনার ভালো লাগা ও মন্দ লাগা জানিয়ে লেখককে অনুপ্রানিত করুন
মোঃ মহিউদ্দীন সান্‌তু ভালো লাগলো ছোট গল্পটি, বেশ লিখেছেন।
ভালো লাগেনি ১৪ জানুয়ারী, ২০১৪
ধন্যবাদ । খুব ভাল থাকবেন ।
ভালো লাগেনি ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
ঐশিকা বসু বেশ ভাল গল্প।
ভালো লাগেনি ১৩ জানুয়ারী, ২০১৪
অনেক ধন্যবাদ ।
ভালো লাগেনি ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
মোহাম্মদ ওয়াহিদ হুসাইন ...-আরে তোর তো মোটর সাইকেল আছে । আমার তাও নেই...। কিন্তু সম্ভবত শান্তি আছে। ভাল লিখেছেন। ভাল লেগেছে।
ভালো লাগেনি ১২ জানুয়ারী, ২০১৪
ধন্যবাদ । খুব ভাল থাকবেন ।
ভালো লাগেনি ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
শফিক আলম ভাল লাগলো.
ভালো লাগেনি ১১ জানুয়ারী, ২০১৪
ধন্যবাদ ।
ভালো লাগেনি ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
ইখতিয়াক ইবনে আহসান ইফাত ভালোই লাগলো
ভালো লাগেনি ১০ জানুয়ারী, ২০১৪
অনেক ধন্যবাদ । খুব ভাল থাকবেন ।
ভালো লাগেনি ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
সুমন ভাল লাগল অরুণের গল্প অরুণদের গল্প
ভালো লাগেনি ৮ জানুয়ারী, ২০১৪
ধন্যবাদ । খুব ভাল থাকবেন ।
ভালো লাগেনি ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
সাদিয়া সুলতানা শুভ কামনা রইল.
ভালো লাগেনি ৮ জানুয়ারী, ২০১৪
অনেক ধন্যবাদ । খুব ভাল থাকবেন ।
ভালো লাগেনি ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
এফ, আই , জুয়েল # বেশ ভাল----অনেক সুন্দর গল্প ।।
ভালো লাগেনি ৮ জানুয়ারী, ২০১৪
ধন্যবাদ । খুব ভাল থাকবেন ।
ভালো লাগেনি ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
বিন আরফান. ভালো লাগা জানিয়ে গেলাম. নিয়মিত হোন, আপনার হাতে যশ আছে বলা যায়. শুভ কামনা রইল.
ভালো লাগেনি ৭ জানুয়ারী, ২০১৪
অনেক অনেক ধন্যবাদ । খুব ভাল থাকবেন ।
ভালো লাগেনি ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪
মোঃ আক্তারুজ্জামান এই শ্রেণীর চাহিদা সম্পন্ন কিছু লোক সদা সর্বত্রই পাওয়া যায়। বেশ ভাল লিখেছেন।
ভালো লাগেনি ৭ জানুয়ারী, ২০১৪
ধন্যবাদ । খুব ভাল থাকবেন ।
ভালো লাগেনি ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪

১৫ জুন - ২০১৩ গল্প/কবিতা: ৬৩ টি

বিজ্ঞপ্তি

এই লেখাটি গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষের আংশিক অথবা কোন সম্পাদনা ছাড়াই প্রকাশিত এবং গল্পকবিতা কর্তৃপক্ষ এই লেখার বিষয়বস্তু, মন্তব্য অথবা পরিণতির ব্যাপারে দায়ী থাকবে না। লেখকই সব দায়ভার বহন করতে বাধ্য থাকবে।

প্রতি মাসেই পুরস্কার

বিচারক ও পাঠকদের ভোটে সেরা ৩টি গল্প ও ৩টি কবিতা পুরস্কার পাবে।

লেখা প্রতিযোগিতায় আপনিও লিখুন

  • প্রথম পুরস্কার ১৫০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • দ্বিতীয় পুরস্কার ১০০০ টাকার প্রাইজ বন্ড এবং সনদপত্র।
  • তৃতীয় পুরস্কার সনদপত্র।

আগামী সংখ্যার বিষয়

গল্পের বিষয় "স্থিতিশীলতা”
কবিতার বিষয় "স্থিতিশীলতা”
লেখা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৫ নভেম্বর,২০২৪